| |
               

মূল পাতা জাতীয় রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান হেফাজতের


রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান হেফাজতের


রহমত নিউজ     06 August, 2024     05:20 PM    


দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে করনীয় নির্ধারণ শীর্ষক" জরুরী এক বৈঠক করেন। “দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে করনীয় নির্ধারণ শীর্ষক" জরুরী এক বৈঠক করেছে হেফাজতে  ইসলাম বাংলাদেশ। 

আজ মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) সকাল ৮টায় রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা খলিল আহমাদ কাসেমী সভাপতিত্ব করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের সাহসী ছাত্র জনতাকে বিরোচিত অভিনন্দন জানিয়ে মাওলানা খলিল আহমাদ কাসেমী বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে এবং এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই জালেম সরকারের পতন ঘটেছে। এই জালেমের বিদায়ের মাধ্যমে এ জাতির লুষ্ঠিত মানবাধিকার পুনঃ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। আওয়ামী স্বৈরশাসকের পতনের এই আনন্দঘন সময়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিজয় মুহূর্তটি সকলে শান্তভাবে উদযাপন করুন। অনুগ্রহ করে কারো প্রতি কেউ প্রতিরোধ, প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসা পরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন কোনোভাবেই তুলে নিবেন না। যাতে একটু ভূলের কারনে আমাদের অর্জিত এই গৌরবজনক বিজয় লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে যায়! এই ব্যাপারে সচেতনতার সাথে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য আমরা দেশ ও জাতির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

বৈঠকে মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, আজ আমরা এক নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি। এই সরকারের শাসনকালে কত মাতা-পিতা তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে বুক চাঁপা আর্তনাদে হাহাকার করেছেন, কত সন্তান তার বাবা-মাকে হারিয়ে ইয়াতিম হয়ে অসহায়ের জীবন যাপন করছেন, কত মা-বোন তাদের পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম প্রিয় স্বামীকে হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েছেন, তার কোনো হিসাব নেই। এই খুনি সরকার গত ১৫ বছরে এদেশে ভয়াবহরকম অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, এই জালেম আওয়ামী সরকার ২০০৯ সালে পিলখানায় আর্মিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ২০১২ সালে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রহ. এর বিরুদ্ধে কথিত রায় পরবর্তী আন্দোলনে সাধারণ জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে উলামায়ে কেরামসহ নবী প্রেমিক তৌহিদী জনতার ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা চালিয়েছে। ২০২১ সালে মূর্তি বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আলেম উলামা ও তালিবুল ইলমসহ তৌহিদী জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ২০২৪ সালের সাম্প্রতিক সময়ে তারা বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্র জনতার ওপর সরকারের মদদপুষ্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দলীয় সন্ত্রাসী ক্যাডারদের লেলিয়ে দিয়ে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। এছাড়া গুম, খুন, অপহরণ করে অগণিত মায়ের বুক খালি করেছে এই সরকার। যারা ওলামায়ে কেরাম ও জনসাধারণের উপর নৃশংস নির্যাতন ও নিপীরণ চালিয়ে নিজেদের হাত রক্তাক্ত করেছে, তাদের কেউ যেনো এদেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে; সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও জনগণের আস্থার প্রতীক সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতি আমরা জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।

মহাসচিব আরো বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা দেশবাসীকে বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিজয় উৎযাপনে ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করবেন না। দেশের সংখ্যালঘু ভিন্ন ধর্মালম্বিদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা হিন্দুদের মন্দির, তাদের বাড়ি ঘর পাহারা দেওয়ার জন্য আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্রসহ হেফাজত এবং দেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ করছি। রাষ্ট্রের এহেন পরিস্থিতিতে যে কোনো অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয় এড়াতে পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারো উস্কানির ফাঁদে পা দিয়ে রাষ্ট্রীয় কোন বাহিনীর সাথে কোনো প্রকার সংঘাতে জড়ানো যাবে না।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মধুপুর পীর মাওলানা আব্দুল হামীদ, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী,  মুফতী জসিম উদ্দীন হাটহাজারী, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা ফজলুল করীম, মুফতী হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতী বশিরুল্লাহ, মুফতী জাকির হুসাইন কাসেমী, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ, মুফতী জাবের কাসেমী, মুফতী কামাল উদ্দীন, মাওলানা রাশেদ বিন নূর,  মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী মাহমুদুল হাসান গুনভী, মাওলানা আলী আকবার কাসেমী, মাওলানা কামরুল ইসলাম, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা শরিফুল্লাহ, মুফতী আমিনুল ইসলাম কাসেমী প্রমুখ।